মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:২২ অপরাহ্ন
সাকিবুল হৃদয় ॥ বরিশাল নগরীর জিয়া সড়ক পোলের উপরে একের পর এক ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সেখানকার স্থানীয়রা। আর এসব দূর্ঘটনার অন্তরালে রয়েছে মাদক সেন্টিকেট, জালটাকার ব্যবসা ও ফুটপাত দখল করে চাঁদাবাজি।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটার সময় একই স্থানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক চা দোকানিকে (নারী) মারধর করা হয়েছে। মারধরের পর দীর্ঘ ২৭ মিনিট মাটিতে পরে ছিলেন ওই নারী। পরে এক অটো চালক উদ্ধার করে বরিশাল শেরে- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তার নাম বা সঠিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। তিনি বর্তমানে বরিশাল শেরে- বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ঘটনা স্থান পরিদর্শন করেছেন কোতয়ালি থানা পুলিশ। জানা গেছে, দুই সন্তানের জননী চা বিক্রি করে নিজ সংসার পরিচালনা করেন।
সোমবার রাত সাড়ে আটটার সময় স্থানীয় এক ব্যাক্তি তার চায়ের দোকানের টুলে বসেন। এসময় তার দুই বাচ্ছা টুলটি বারবার ধাক্কা ধাক্কি করেন। ওই ব্যাক্তি নিষেধ করলে না শোনায় অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। এর প্রতিবাদ করলে তার দুই সন্তানের জননীর গলাটিপে ধরেন ব্যাক্তি। বাঁচার জন্য হামলাকরীর এক হাতের একটি আঙ্গলে কামর দেন। হামলাকরী ব্যাক্তি হাতের কাছে পাওয়া লোহার শরতা দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। আহত নারীর মাথায় আঘত পান এবং মুখ থেকে রক্ত বের হয়। ঘটনার কিছু সময় পর ক্ষমতাশীন দলের এক নেতা হামলাকরীর পক্ষ নিয়ে ওই নারীর দোকান ভাংচুর করেন। পাশাপাশি অশিল ভাষায় গালাগালি করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি।
কোতয়ালী থানার এস আই শহিদুল বলছেন, আহত নারী সুস্থ হলে জানা যাবে ঘটনা কি ঘটে ছিলো। জানা গেছে, ৬/৭ দিন আগে জিয়া সড়ক পোলের উপরে ফুটপাত দখল রাখা একটি চায়ের দোকানে ৫শত টাকার জাল নোট দেন জিয়া সড়ক এলাকার এক যুবক। টাকা নিয়ে সন্ধেহ হলে এক নারীর কাছে দেখান চা দোকানদার। এসময় জাল টাকা বলে চেচামেচি করেন ওই নারী। পরে তার উপর চড়াও হয় ওই যুবক। এক পর্যায় জাল টাকার নোট নিয়ে দ্রুত চটকে পরেন ওই যুবক। এদিকে ঘটনার রেস কাটতে না কাটতেই বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া এগারোটার দিকে ওই নারীর মেয়ে জামাইকে মারধর করেন বেশ কয়েক জন যুবক। যার একটি ভিডিও ফুটেজ রয়েছে এই প্রতিবেদকের কাছে।
মারধর শেষে ওই নারী সবার সম্মুখে বলেন এখানে জাল টাকার ব্যবসাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলে বাদ যায় না ইয়াবা ব্যবসা। মেয়ে জামাইকে মারধর করায় এয়াপোর্ট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এ এস আই নাজমুল। বিষয়টি নিয়ে তদন্তকরী কর্মকর্তার সামনেও ওই নারী ওপেন বলেন এই পোলের উপরে সব চলে। যাদের বিরুদ্ধে ওই নারীর অভিযোগ তাদেরও একই অভিযোগ তিনি মাদকের সাথে জরিত। উভয় পক্ষকে মিলিয়ে দেয়া হয়।একাধীক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ফুটপাত দখল করে দোকান থাকায় পথচারীদের অনেক গাদাগাদি করে চলতে হয়। এখানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এক চা দোকনদার বলেন, অনেক টাকার বিনিময়ে এখানে ব্যবসা করতে হয়। ফুটপাত দখল নিয়ে মাঝেমধ্যে মারামারি হয়। কারণ ফুটপাত যার দখলে থাকে তাকেই চাঁদা দিতে হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফুটপাতের চাঁদাবাজি সরকারদলীয় কয়েকটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করে। মাঝেমধ্যে ঝামেলা হলে তা নিজেরাই মিটিয়ে ফেলে। থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায় না। এখানে মাদক বেচাকেনাও হয় বলে জানান তিনি। এমত অবস্থায় প্রসাশনের হস্থক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।
Leave a Reply